জনবলের অভাবে বন্ধ হয়ে আছে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার মালঞ্চি রেলস্টেশন। ২টি ট্রেন থামলেও প্ল্যাটফর্মে না থেমে বরং বাইরের লাইনে থামে। এ কারণে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে যাত্রী সাধারণের ট্রেনে উঠতে হয় ঝুঁকি নিয়ে মই বেয়ে।
কেউবা হাতল ধরে ঝুলে ঝুলেও ট্রেনে ওঠেন। এতে যাত্রীদের, বিশেষ করে নারী, শিশু ও বয়স্কদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বার বার প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও তাতে কাজের কাজ হয়না। তাই কর্তৃপক্ষকে বলছি সরেজমিনে দেখে স্টেশনমাস্টার নিয়োগ করুন। চলতি বছরে বাংলাদেশ রেলওয়ের ১১৬টি স্টেশন বন্ধ হয়েছে।
এখন দেখা যাচ্ছে কোথাও কোথাও স্টেশন বন্ধ না হলেও যাত্রীদের মই বেয়ে ট্রেনে উঠতে হচ্ছে। অদ্ভুত এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে দেশের রেল ব্যবস্থায়। অথচ দেশে রেল খাত দেখভালের জন্য একটি মন্ত্রণালয় রয়েছে! সারা বিশ্বে যেখানে রেল যোগাযোগ উন্নত হচ্ছে সেখানে বাংলাদেশে এর ক্রমাবনতি হচ্ছে।
অনেকেই নিরুপায় না হলে বা বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকলে ট্রেনে ওঠেন না। নাটোরের বাগাতিপাড়ার মানুষও অনেকটা নিরুপায় হয়ে ট্রেনে ওঠা-নামার ভোগান্তি নিয়েই রেলপথে যাতায়াত করেন।
ভোগান্তির কথা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। তারা জনবল সংকটের কথা বলছেন। রেলওয়ের সমস্যার কোন অন্ত নেই। লোকবল সংকট, অদক্ষতা-অযোগ্যতা, অনিয়ম-দুর্নীতি, সময়ানুবর্তিতার অভাব, টিকিট কেনায় দুর্ভোগ, মেয়াদোত্তীর্ণ বগি ও ইঞ্জিন ইত্যাদি বহু পুরনো সমস্যা। টিকিট কাটা থেকে শুরু করে যাত্রী পরিবহন পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে নানান হয়রানি আর ভোগান্তি পোহাতে হয় মানুষকে।
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, সর্বাঙ্গে ব্যথা ওষুধ দেব কোথা। একটি-দুটি করে শতাধিক স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে।
বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে আরো অনেক স্টেশন। এরপর হয়তো কোন রেলরুট বন্ধ হবে। অতীতে অনেক রেলরুট বন্ধ হতে দেখা গেছে। এভাবে পুরো রেল খাতই একসময় বড় ধরনের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানোর জন্য পুরো রেল ব্যবস্থাই ঢেলে সাজানো জরুরি হয়ে পড়েছে।
রেলের অবস্থা এমন হয়েছে, সর্বাঙ্গে ব্যথা ওষুধ দেব কোথা! লেখক : সাংবাদিক